Thursday, December 3rd, 2015




নিতাইগঞ্জে প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে না

009
বিশেষ প্রতিবেদক,নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন ডট কম : সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে প্লাস্টিকের ব্যাগ না থাকার অভিযোগে ব্যাপক সাড়াসী অভিযানে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা অনেক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করলেও শহরের নিতাইগঞ্জে বীরদর্পে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করছে নিতাইগঞ্জের নানা অপকর্মের হোতা এবং সেভেন মার্ডারের অন্যতম হোতা নূর হোসেনের একান্ত সহযোগি গোপীনাথ ভান্ডারের মালিক নাড়– সাহা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রকাশ্যে প্লাস্টিকের বস্তাভর্তি মালামাল ট্রাকে তোলাকালীন সময়ে জিঞ্জাসা করলে শ্রমিকরা জানায়, এই মাল নাড়– বাবুর মাল। ময়মনসিংহের হালুয়া ঘাটে যাবে। প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করতে নাড়– বাবু তিন মাসের অনুমতি নিয়েছে । বীরদর্পেই শ্রমিকদের এমন মন্তব্য শুনে হতবাক উপস্থিত অনেকে।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, সরকার কর্তৃক পলিথিনের বস্তার উপর কঠোর নির্দেশের পর প্রতিদিনই গোপীনাথ ভান্ডারের মালিক নাড়– তার প্রয়াত বাবার দারোগা হীরা লালের নাম ব্যবহার করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ম্যানেজ করে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করে আসছে । গত দুই তিনদিন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হলেও মাদক ব্যবসায়ী নাড়–র মালিকানাধীন গোপীনাথ ভান্ডারের গোডাউনে অভিযান চালায় নাই কোন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা । ভ্রাম্যমান আদালতের এমন অভিযানের সুযোগ নিয়ে নাড়– পুরো নিতাইগঞ্জে প্রচার চালায় তারা আরো তিন মাস অনুমতি নিয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করতে। তিন মাস অনুমতির বিষয়টি প্রচার হলে নিতাইগঞ্জে অনেক ব্যবসায়ী তিব্র সমালোচনা করে বলেন, এক বাজারে দুই বিচার কি করে হয় । নাড়– দিব্যি প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করে ব্যবসা করছে আর অন্যেরা করলে তাকে জেল জরিমানা গুণতে হচ্ছে।
প্রশাসনের নাম ব্যবহার সম্পর্কে খোজ নিতে গিয়ে আরো অনেক ব্যবসায়ী বলেন, নাড়– একজন ধূর্ত প্রতারক । সে গোপীনাথ ভান্ডারের ব্যবসার অন্তরালে মাদক ব্যবসা, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে আঁতাত, গোপনে বিফোরক দ্রব্য মজুদ, অবৈধ অস্ত্রে বেচাকেনার জোড়ালো অভিযোগ রয়েছে । তার গোডাউনে ৬শ বস্তা চিনির গোডাউনে রহস্যজনক বিস্ফোরণে তিন জন শ্রমিক মারা গেলে তার হিসাব আজো কেউ মিলাতে পারে নাই। অথচ একই সময়ে নিতাইগঞ্জে অনেক ব্যবসায়ীর গোডাউনে হাজার হাজার বস্তা চিনি মজুদ থাকলেও তাতে কোন ক্ষতি হয় নাই । বিস্ফোরনের সময় একই কায়দায় নিজের বাবার নাম ব্যবহারসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে ম্যানেজ করে রহস্যেঘেরা বিস্ফোরণ ধামাচাপা দেয় নাড়– ও তার মাদক ব্যবসার মূল গডফাদার সাত খুনের মূল হোতা নূর হোসেন। ঐ বিস্ফোরণের পর আর নাড়–কে আটকানো যায় নাই । রাতারাতি কোটি কোটি টাকার পাইকারী ফেনসিডিল কুমিল্লা থেকে ট্রাক ভর্তি করে আনার পর সিদ্ধিরগঞ্জে তা বিক্রি করে বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক। অসংখ্যবার ফেনসিডিলের বিশাল চালানসহ নাড়– আটক হলেও নূর হোসেনের বদৌলতে সে বারবারই রক্ষা পেয়ে যায় । মাত্র কয়েক বছর পূর্বে যার কিছুই ছিল না সেই নাড়– বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে তিনটি বহুতল ভবনের মালিক। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল রাতে নূর হোসেন ও আলী মোহাম্মদ নিতাইগঞ্জে নাড়–র বাড়ীতে থেকে সকল স্থানে যোগাযোগ করে। এবং নুর হোসেনকে সাথে নিয়েই নাড়– ভারতে পালিয়ে যায় । দীর্ঘ তিন মাস পর নাড়– দেশে ফিরে এসে দ্রুত সময়ের মধ্যেই সাত খুনে ব্যবহৃত গাড়ীটি ঢাকায় বিক্রি করে দেয় । সাত খুনের পর নুর হোসেনের রেখে যাওয়া কোটি কোটি টাকা ভারতে পাচার করে দমদম কারাগারে আরামে থাকার সুযোগ করে দেয় এই ধূর্ত নাড়– । সাত খুনে নূর হোসেনের নির্দেশে নাড়–র ব্যবহৃত গাড়ীটি এখন কোথায় এবং তার ড্রাইভার ফজলুকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বেড়িয়ে আসবে নাড়–র কু কর্মের অনেক তথ্য । এখন এই ধূর্ত নাড়– চিনির ব্যবসার অন্তরালে সকল ধরনের ঘৃন্য কর্মকান্ত চালিয়ে যাচ্ছে । (আগামী রোববার আরো আসছে সাত খুনে ব্যবহৃত গাড়ী ও নানা অপকর্মের তথ্য)
এ ব্যাপারে গোপীনাথ ভান্ডারের মালিক নাড়– সাহা জানান, পলিথিনের বস্তাগুলো চিনির। এবং এগুলো মেঘনা গ্রুপের চিনি। আমরা তাদের এজেন্ট। মেঘনা গ্রুপ ৬ মাসের অনুমোদন এনেছে হাই কোর্ট থেকে। মেঘনা গ্রুপ ছাড়াও আরো কয়েকটি কোম্পানি এমন অনুমোদন এনেছে বলেও তিনি দবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category